করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে জুলাই মাসের সংক্রমণ জুন ও এপ্রিল মাসকে ছাড়িয়ে যাবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, রোগীর সংখ্যা দিনদিন এভাবে বাড়লে সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এমনকি অক্সিজেন সরবরাহেও চ্যালেঞ্জ দেখা দেবে।
বুধবার (৭ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত করোনা বিষয়ক বুলেটিনে অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে ২১ হাজার ৬২৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এপ্রিল মাসে সেই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে ছিল। জুন মাসে শনাক্ত হয় এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন। জুলাই মাসে এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়দিনেই ৫৩ হাজার ১৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী এই প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় জুলাইয়ে রোগীর সংখ্যা জুন-এপ্রিল মাসকেও ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি বলেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের শুরুতে দেশে করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২৫ শতাংশের কিছু বেশি। কিন্তু গতকাল ৬ জুলাই শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত ২৯ জুন করোনা শনাক্ত হয় আট হাজার ৮২২ জনের, যেটি সপ্তাহের ব্যবধানে ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
নাজমুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা একশর উপরে। গত ৩০ জুন দেশে ১১৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিল। এরপর প্রতিদিনই একশর ওপরে আছে মৃত্যুর সংখ্যা। গতকাল ৬ জুলাই এসে তা ১৬৩ জনে পৌঁছেছে। এর আগের দিন (৫ জুলাই) মারা গেছে ১৬৪ জন। সবমিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত দেশে ১৫ হাজার ৩৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি মৃত্যুই আমাদের বেদনার্ত করে। এসব মৃত্যু থেকে যদি আমরা শিক্ষা গ্রহণ না করি তাহলে এই মৃত্যু, এই বেদনা মূল্যহীন ও অর্থহীন হয়ে যাবে।
পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষ বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষ বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ৫ জুলাই সকাল ৮টা থেকে ৬ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত মৃতের যে সংখ্যাটি আমরা দেখি, সেখানে ষাটোর্ধ্ব যারা আছেন তারাই বেশি। সেদিন আমরা ষাটোর্ধ্ব ৯১টি মূল্যবান প্রাণ ঝরে যেতে দেখেছি। সেখানে পঞ্চাশোর্ধ্ব ছিলেন ৩০ জন। সব মিলিয়ে ৫০ বছর থেকে ষাটোর্ধ্ব যারা আছেন, তারাই করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করছেন।
তিনি আরও বলেন, ঘরে বয়স্কদের সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের যারা যুবক রয়েছে তাদের। সুতরাং যুবকদেরকেও আমাদের রক্ষা করতে হবে। তা না হলে যুবকদের মাধ্যমে বয়স্করা আক্রান্ত হবেন।